সিরামিক পাহাড়, দূর্গাপুর, নেত্রকোনা


নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুরের কুল্লাগড়া ইউনিয়নস্থ শশাড়পাড় নামক প্রত্যন্তর গ্রামে অবস্থিত সিরামিক পাহাড়/সিরামিক হ্রদ।নামকরনে রয়েছে ব্যাপক বৈচিত্র্য।বিভিন্ন ওয়েব সাইট, ফেইজবুক পেইজ, অনলাইন পত্রিকা ঘাটাঘাটি করে জানার চেষ্টা করি এর প্রকৃত নামকরন যেমনটা পাওয়া যায় শ্বেত শুভ্র পাহাড়/বিজয়পুর চীনা মাটির পাহাড়/প্রাকৃতিক চীনা মাটির পাহাড় প্রভৃতি।

 

নামকরনের বৈচিত্রতা দেখে ও অনলাইনে এর সৌন্দর্য উপভোগ করে স্বচক্ষে দেখার লোভ সংবরণ করতে পারলামনা।অতপর বাস্তবে দেখার সুযোগ হয়ে গেল।পাঠক , এর সৌন্দর্য বর্ননা করার মতো ভাষা আমার অভিধানে নাই। যারা অ্যাডভেন্ঞ্চার প্রিয়, তাদের জন্য এক অনবদ্য স্পট বলা যায়।

 

আমার দর্শন মতে, এখানে বেশ কয়েকটি টিলা সদৃশ পাহাড় বিদ্যমান।এক একটি টিলা বা পাহাড় তাদের স্বীয় সৌন্দের্যে উজ্জলিত ।আরো আশ্চর্যের বিষয় হলো একই পাহাড় বিভিন্ন রংয়ে বিভিন্ন রুপে সজ্জিত।অবার কোন কোন পাহাড় সিরামিক পুকুড় ঘেষা। পুকুরে সাতাঁর কাটা বা নামার ক্ষেত্রে রয়েছে কর্তৃপক্ষের নিষেদাজ্ঞা। জনশ্রুতি রয়েছে, সাতাঁর কাটতে নেমে এখানে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।সম্ভবত পানিতে ক্যামিকেলের আধিক্য থাকায় এই নিষেধাজ্ঞা নোটিশ জারি করা হয়েছে। তাই সাতাঁরকাটা বা গোসলের উদ্দেশ্যে পানিতে না নামাই শ্রেয়।

 

এই পুকুরের পাশেই রয়েছে বাংলাদেশ ইনসুলেটর এন্ড স্যানিটারি ওয়্যার ফ্যাক্টরি লি: এর সাদা মাটির কোয়ারি প্রকল্প।প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে সাদা মাটির অন্যতম বৃহত্তম খনিজ অঞ্চল এটি। এখান হতে সংগ্রহিত উপাদান সিরামিক শিল্পে ব্যবহ্রত হচ্ছে। যা আমাদের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে।

 

আরো একটু সামনে গেলেই পাওয়া যাবে, সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাচের একটি পাহাড়।যা এ স্পটের প্রধান আকর্ষণ।চারদিক পাহাড় ঘেরা আর মাঝখানে জলাধার।এ জলাধারের পানি পেস্ট কালারের মতো।তাই আমি এর নামকরন করেছি পেস্টি লেক।জনশ্রুতি রয়েছে এই লেকের গভীরতা ৭০ ফুট। এই জলাধারের ব্যাপারে কোন সর্তককীকরন বোর্ড প্রদর্শিত না হলেও সহজেই অনুমাান করা যায়,এই লেক বা জলাধারও সাতাঁর বা গোসলের জন্য নিরাপদ নয়। তবে সৌন্দর্য বর্ধনে এই পেস্টি লেকের যেন কোন জুড়ি নেই।

 

যেভাবে যাবেন: ঢাকার মহাখালী বাস স্ট্যান্ড হতে নেত্রকোনা যাওয়ার জন্য রয়েছে সরাসরি বাস সার্ভিস।এছাড়াও কমলাপুর বি.আর.টি.সি. বাসস্ট্যান্ড হতে নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ ও দূর্গাপুর উপজেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বি.আর.টি.সি সেবা। এছাড়াও ঢাকা টু মোহনগঞ্জের উদ্দেশ্যেও রয়েছে ট্রেনসেবা। ভাড়াও খুব একটা বেশি নয়। জনপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা।

 

নেত্রকোনা সদর হতে এই স্পটের দূরত্ব ২২/২৫ কিলোমিটার।তাই সবচেয়ে ভালো হয় , সারাদিনের জন্য ১০০০/১২০০ টাকায় মটর সাইকেল ভাড়া করে অ্যাডভেঞ্চারের উদ্দেশ্যে বের হওয়া।বেশ আকাবাকা পথ পাড়ি দিতে মটর সাইকেলই হল সবচেয়ে ভালো উপায়।সময় সাশ্রয় হবে এবং দিনে দিনে বেড়িয়ে আসা যাবে।

 

আরো যা দেখতে পাবেন: যাওয়ার পথেই পড়বে ১) সোমেশ্বরী নদী, ২)উপজাতিয় কালচারাল একাডেমি,বিরিশিরি ৩) মিশন স্কুল ৪) মেঘালয় পাহাড়, ৫) টং ও কৃষক আন্দোলনের পথিকৃত নেত্রী হাজং মাতা শহীদ রাশি মনির স্মৃতি সৌধ প্রভৃতি।

Privacy Preference Center

Necessary

Advertising

Analytics

Other