গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি,হোসেনপুর,কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গাঙ্গাটিয়া নামক গ্রামে অবস্থিত ”গাঙ্গাটিয়া জমিদার” বাড়ি।জানা যায় এ বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা দীননাথ চক্রবর্তী।বাড়িটি নিউ ক্লাসিক্যাল স্থাপত্য ধারায় নির্মিত।জমিদার বাড়ির চর্তুদিক সুউচ্চ প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত।
”কিশোরগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য” গ্রন্থের রচয়িতা জেলার প্রখ্যাত সাংবাদিক মু আ লতিফ তারঁ গ্রন্থে উল্লেখ করেন ১৪২০খ্রি: রাজা গনেশের মৃত্যুর পর বাংলার সিংহাসনে বসেন রাজা গনেশের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত পুত্র জালাল উদ্দীন মোহাম্মদ শাহ।সিংহাসনে বসেই তিনি হিন্দুদেরকে মুসলমান হতে বাধ্য করেন।ফলে অনেক পরিবার কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে চলে আসতে বাধ্য হন।এদের মধ্যে তাড়াইলের বহুরা গ্রামের কবি নারায়ন দেবের পূর্বপুরুষ,গাঙ্গাটিয়ার জমিদার দীননাথ চক্রবর্তীর পূ্র্বপরুষ এবং কবি চন্দ্রাবতীর পূর্বপুরুষ অন্যতম।
জনশ্রুতি রয়েছে দীননাথ চক্রবর্তী চৌধুরী একজন খাতনামা ও প্রজাবৎসল জমিদার ছিলেন।জমিদার বংশের অধস্তন দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন হলেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী মানবেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী চৌধুরী;এলাকাতে মানব বাবু নামে তিনি অধিক পরিচিত এবং অপরজন হলেন তপন চক্রবর্তী চৌধুরী;য়িনি হোসেনপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।সম্প্রতি মারা যান তপন চক্রবর্তী চৌধুরী।
জমিদার বাড়ির প্রধান ভবনের দক্ষিনে নির্মিত হয় মোহাফেজখানাটি যা অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমদিকে মোঘল স্থাপত্য রীতি অনুসরণ করা হয়।বর্তমানে এটি ধ্বংসপ্রায়।এ ইমারতটিতে জমিদারদের যাবতীয় দলিলপত্র সংরক্ষণ করা হতো।পাশে একই স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত হয়েছিল খাজাঞ্চি খানা। খাজাঞ্চি খানাটি ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে এবং বর্তমানে খাজাঞ্চিতে জনসাধারনের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিস্তৃত আয়তনে বাড়িটি নির্মিত হয়েছিল।এতে যেসকল ইমারত রয়েছে তার মধ্যে বসতভিটা,দরবার কক্ষ,মোহাফেজখানা,খাজাঞ্চি, মোহাফেজখানার পেছনে পুকুর,দরবার কক্ষের সম্মুখে সুবিশাল আঙ্গিনা যেন তা সবুজ কাপের্টে মুড়ানো।রয়েছে সারি সারি নারিকেল গাছের সমারোহ।আরো রয়েছে প্রকান্ড একখানা আম গাছ যা কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িঁয়ে আছে সবুজ কার্পেটে।
জমিদার বাড়ির সম্মুখে রয়েছে শান বাধাঁনো সুবিশাল পুকুর।পুকুরের চারপাশ বেশ মনোরম।জমিদার বাড়ি হতে এক-দেড় কিলো পূর্বে উত্তর লাখুহাটি(ফিসারি রোড)এলাকায় রয়েছে মানব বাবুর বিস্তৃত মাছের প্রজেক্ট।এ যেন সাগরের সাথে আকাশের এক অপূর্ব মিশেল।ভ্রমন পিপাষুদের জন্য বেশ মনোরম একটা পরিবেশ বলা চলে।
যাতায়াত ব্যবস্থা: কিশোরগঞ্জ সদর থানার বটতলা মোড়(পুরাতন জেলখানা) হতে সিনজি বা অটোগাড়ি যোগে গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গাঙ্গাটিয়া নামক স্থানে ইহার অবস্থান।ভাড়াবাবদ আপনার ২৫টাকা/জনপ্রতি খরচ হবে।
অবাসিক ব্যবস্থা: উল্লেখিত স্থানে আবাসনের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। তবে কিশোরগঞ্জ সদর পৌরসভায় গাংচিল, উজানভাটি, নিরালা, ক্যাসেল সালাম নামে চাইনিজ ও আবাসিক হোটেল এর ব্যবস্থা রয়েছ। অবস্থানঃ গৌরাঙ্গবাজার, কিশোরগঞ্জ।













